জিকা ভাইরাস (Zika Virus) বর্তমানে বহুল
আলোচিত বিষয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
ইতিমধ্যেই বিশ্বব্যাপী সতর্কতা জারি
করেছে। বাংলাদেশও এই সতর্কতার
বাইরে নয়। তাই এই রোগ সম্পর্কে
আমাদের জানা উচিত। মানুষের
সচেতনতা ও সাবধানতা যে কোনো
রোগ প্রতিকারে সহায়ক।
শনাক্তকরণ ও নামকরণ: গবেষকেরা এই
ভাইরাস শনাক্ত (Identify) করেন ১৯৪৭
সালে। আফ্রিকার দেশ উগাণ্ডার
একটি বনের নাম জিকা। সে বনের
বানর থেকে এই ভাইরাস শনাক্ত করা হয়
বলে গবেষকেরা নাম দিয়েছেন
জিকা ভাইরাস।
আক্রান্ত অঞ্চল: জিকা ভাইরাস নিয়ে
তেমন উদ্বেগ দেখা যায়নি কখনো।
হঠাৎ করে গত দু-বছর যাবৎ দক্ষিণ
আমেরিকায় এর প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়।
ব্রাজিলে, জিকা ভাইরাস ছড়িয়ে
পড়ে দ্রুত। বর্তমানে দক্ষিণ ও মধ্য
আমেরিকায় এই ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে
পড়বে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সে জন্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা
হচ্ছে।
যেভাবে ছড়ায়: জিকা ভাইরাস ছড়ায়
এডিস (Aedes aegypti) প্রজাতির মশার
মাধ্যমে। এই মশা, ডেঙ্গু ভাইরাসও
ছড়ায়। জিকা ভাইরাস আক্রান্ত
ব্যক্তির মাধ্যমেও সুস্থ মানুষের মধ্যে
ভাইরাস ছড়াতে পারে।
লক্ষণ: জিকা ভাইরাস আক্রান্ত হলে
যে লক্ষণ দেখা দিতে পারে—জ্বর,
মাথা ব্যথা, চোখ ওঠা, অস্থি-
সংযোগে ব্যথা ও ত্বক লাল হয়ে
যাওয়া ইত্যাদি।
রোগের তীব্রতা: আশার খবর হলো, এ
ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর ভয়াবহ
কোনো সমস্যা হয় না। ৫-৭ দিনের মধ্যে
এমনিতেই রোগ সেরে যায়। মৃত্যুর
সম্ভাবনা প্রায় শূন্য। গর্ভবতী নারীরা
জিকা ভাইরাস আক্রান্ত হলে গর্ভস্থ
শিশুর স্বাভাবিক বিকাশে সমস্যা
দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে
মস্তিষ্কের পরিপূর্ণ বিকাশে ব্যাঘাত
ঘটতে পারে। যেটি মাইক্রোসেফালি
(Microcephaly) নামে পরিচিত। ব্রাজিলে
গত বছর হঠাৎ করে কয়েক হাজার শিশু
স্বাভাবিকের তুলনায় ছোট মাথা
নিয়ে জন্মায়। অনেকেই মনে করছেন
জিকা ভাইরাসের কারণে এমনটি হতে
পারে। তবে জিকা ভাইরাসের জন্যই
যে এমনটি হয়েছে, সে বিষয়ে
গবেষণালব্ধ সুনির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ
(experimental evidence) মেলেনি। তাই
জিকা ভাইরাস আক্রান্ত হলে, গর্ভস্থ
শিশুর মাইক্রোসেফালি হতে পারে-
এমন ভাবনায় মানুষ অকারণেই
মাত্রাতিরিক্ত ভয় পাচ্ছে।
প্রতিকার ও প্রতিষেধক: জিকা ভাইরাস
দমনের জন্য এখনো কোনো টিকা বা
নির্দিষ্ট ওষুধ উদ্ভাবিত হয়নি। আক্রান্ত
রোগীকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে।
প্রচুর পানীয় খাবার খাওয়া উচিত।
ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন
করতে হবে।
এ ভাইরাস থেকে প্রতিকারের উপায়
হলো, মশা থেকে নিজেকে নিরাপদে
রাখা। ঘর-বাড়ি মশা মুক্ত রাখা। ঝোপ-
ঝাড় পরিষ্কার করা। মশার বিস্তার রোধ
করা। মশানাশক ও মশারি ব্যবহার করা।
আক্রান্ত ব্যক্তির কাছ থেকে নিরাপদে
থাকা।
বাংলাদেশে প্রায়শই কোনো রোগ
সম্পর্কে সঠিক তথ্য না দিয়ে ভয়
জাগিয়ে দেওয়া হয়। অযথা ভীতি
নিয়ে না থেকে সঠিকভাবে জানুন।
নিজে সচেতন হয়ে অন্যকে জানান। সে
অনুযায়ী সতর্কতা অবলম্বন করুন। মানব
সভ্যতায় রোগ নতুন কিছু নয়। রোগ
লড়াইয়ে প্রয়োজন সঠিক জ্ঞান ও
সাবধানতা। বাংলাদেশ হোক জিকা
ভাইরাস মুক্ত-এই কামনা।
রউফুল আলম: গবেষক, স্টকহোম
বিশ্ববিদ্যালয়, সুইডেন।
আলোচিত বিষয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
ইতিমধ্যেই বিশ্বব্যাপী সতর্কতা জারি
করেছে। বাংলাদেশও এই সতর্কতার
বাইরে নয়। তাই এই রোগ সম্পর্কে
আমাদের জানা উচিত। মানুষের
সচেতনতা ও সাবধানতা যে কোনো
রোগ প্রতিকারে সহায়ক।
শনাক্তকরণ ও নামকরণ: গবেষকেরা এই
ভাইরাস শনাক্ত (Identify) করেন ১৯৪৭
সালে। আফ্রিকার দেশ উগাণ্ডার
একটি বনের নাম জিকা। সে বনের
বানর থেকে এই ভাইরাস শনাক্ত করা হয়
বলে গবেষকেরা নাম দিয়েছেন
জিকা ভাইরাস।
আক্রান্ত অঞ্চল: জিকা ভাইরাস নিয়ে
তেমন উদ্বেগ দেখা যায়নি কখনো।
হঠাৎ করে গত দু-বছর যাবৎ দক্ষিণ
আমেরিকায় এর প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়।
ব্রাজিলে, জিকা ভাইরাস ছড়িয়ে
পড়ে দ্রুত। বর্তমানে দক্ষিণ ও মধ্য
আমেরিকায় এই ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে
পড়বে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সে জন্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা
হচ্ছে।
যেভাবে ছড়ায়: জিকা ভাইরাস ছড়ায়
এডিস (Aedes aegypti) প্রজাতির মশার
মাধ্যমে। এই মশা, ডেঙ্গু ভাইরাসও
ছড়ায়। জিকা ভাইরাস আক্রান্ত
ব্যক্তির মাধ্যমেও সুস্থ মানুষের মধ্যে
ভাইরাস ছড়াতে পারে।
লক্ষণ: জিকা ভাইরাস আক্রান্ত হলে
যে লক্ষণ দেখা দিতে পারে—জ্বর,
মাথা ব্যথা, চোখ ওঠা, অস্থি-
সংযোগে ব্যথা ও ত্বক লাল হয়ে
যাওয়া ইত্যাদি।
রোগের তীব্রতা: আশার খবর হলো, এ
ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর ভয়াবহ
কোনো সমস্যা হয় না। ৫-৭ দিনের মধ্যে
এমনিতেই রোগ সেরে যায়। মৃত্যুর
সম্ভাবনা প্রায় শূন্য। গর্ভবতী নারীরা
জিকা ভাইরাস আক্রান্ত হলে গর্ভস্থ
শিশুর স্বাভাবিক বিকাশে সমস্যা
দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে
মস্তিষ্কের পরিপূর্ণ বিকাশে ব্যাঘাত
ঘটতে পারে। যেটি মাইক্রোসেফালি
(Microcephaly) নামে পরিচিত। ব্রাজিলে
গত বছর হঠাৎ করে কয়েক হাজার শিশু
স্বাভাবিকের তুলনায় ছোট মাথা
নিয়ে জন্মায়। অনেকেই মনে করছেন
জিকা ভাইরাসের কারণে এমনটি হতে
পারে। তবে জিকা ভাইরাসের জন্যই
যে এমনটি হয়েছে, সে বিষয়ে
গবেষণালব্ধ সুনির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ
(experimental evidence) মেলেনি। তাই
জিকা ভাইরাস আক্রান্ত হলে, গর্ভস্থ
শিশুর মাইক্রোসেফালি হতে পারে-
এমন ভাবনায় মানুষ অকারণেই
মাত্রাতিরিক্ত ভয় পাচ্ছে।
প্রতিকার ও প্রতিষেধক: জিকা ভাইরাস
দমনের জন্য এখনো কোনো টিকা বা
নির্দিষ্ট ওষুধ উদ্ভাবিত হয়নি। আক্রান্ত
রোগীকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে।
প্রচুর পানীয় খাবার খাওয়া উচিত।
ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন
করতে হবে।
এ ভাইরাস থেকে প্রতিকারের উপায়
হলো, মশা থেকে নিজেকে নিরাপদে
রাখা। ঘর-বাড়ি মশা মুক্ত রাখা। ঝোপ-
ঝাড় পরিষ্কার করা। মশার বিস্তার রোধ
করা। মশানাশক ও মশারি ব্যবহার করা।
আক্রান্ত ব্যক্তির কাছ থেকে নিরাপদে
থাকা।
বাংলাদেশে প্রায়শই কোনো রোগ
সম্পর্কে সঠিক তথ্য না দিয়ে ভয়
জাগিয়ে দেওয়া হয়। অযথা ভীতি
নিয়ে না থেকে সঠিকভাবে জানুন।
নিজে সচেতন হয়ে অন্যকে জানান। সে
অনুযায়ী সতর্কতা অবলম্বন করুন। মানব
সভ্যতায় রোগ নতুন কিছু নয়। রোগ
লড়াইয়ে প্রয়োজন সঠিক জ্ঞান ও
সাবধানতা। বাংলাদেশ হোক জিকা
ভাইরাস মুক্ত-এই কামনা।
রউফুল আলম: গবেষক, স্টকহোম
বিশ্ববিদ্যালয়, সুইডেন।
No comments:
Post a Comment